/> মাশরুম খাওয়া কি হালাল,মাশরুম খেলে : প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে

Header Ads Widget

মাশরুম খাওয়া কি হালাল,মাশরুম খেলে : প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে

 👉মাশরুম  খাওয়া কি হালালমাশরুম খেলে যে সব রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বারে 👈

সাধারণত  ছত্রাক  সম্পর্কে  হয়তো অনেকের ই ধারণা রয়েছে।কিংবা অনেকেরই  হয়তো অল্প ধারণা।মাশরুম হলো এক ধরণের ভক্ষণযোগ‍্য  মৃতজীবি ছত্রাকের ফলন্ত অঙ্গ।ছত্রাকবিদরা বিশ্বে প্রায়  ৩ লক্ষ প্রজাতির ছত্রাক  চিহ্নিত  করতে পেরেছেন। 








এই অসংখ্য  ছত্রাকের  মধ‍্য থেকে দীর্ঘ  যাচাই ও বাছাই করে যে সমস্ত ছত্রাক সম্পূর্ণ  খাওয়ার উপযোগী,পুষ্টিকর ও সুস্বাদু সেগুলোকেই তারা মাশরুম   হিসেবে গণ‍্য করেছেন।সুতরাং ব‍্যাঙের ছাতা এবং  মাশরুম  এক জিনিস  নয়।ব‍্যাঙের ছাতা প্রাকৃতিকভাবে যত্রতত্র গজিয়ে ওঠা বিষাক্ত  ছত্রাকের ফলন্ত অংশ।কিন্তু মাশরুম  হলো বিশ্বের সর্বাধুনিক পদ্ধতি (টিস‍্যু কালচার)- এর মাধ‍্যমে উৎপন্ন বীজ দ্বারা সম্পূর্ণ  পরিচ্ছন্ন  পরিবেশে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে চাষ করা সুস্বাদু, পুষ্টিকর  এবং  ঔষধি গুণসম্পন্ন সবজি,যা সম্পূর্ণ  হালাল।


গ্রীকরা মাশরুমকে যোদ্ধাদের  শক্তিবর্ধক খাবার  হিসেবে গণ‍্য করেন।রোমানরা একে ঈশ্বরের খাবার এবং  চাইনিজ  লোকেরা মাশরুমকে দীর্ঘজীবি হওয়ার খাদ্য  হিসেবে  বিশ্বাস  করেন। একজন সুস্থ লোকের প্রতিদিন ২০০-২৫০গ্রাম সবজি খাওয়া  দরকার। উন্নত  দেশের লোকজন  দৈনিক ৪০০-৫০০গ্রাম সবজি  খায়।



কারণ সবজিতে পাওয়া  যায়  দেহকে সুস্থ, সবলও রোগমুক্ত রাখার প্রয়োজনীয় সুষম খাদ‍্য উপাদান ও রোগ প্রতিরোধক ভিটামিন ওমিনারেল।তাই আমাদের  দেশের মানুষের  অপুষ্টিজনিত সমস্যা  দূর করার জন‍্য বেশি করে সবজি খাওয়া  প্রয়োজন।বিভিন্ন দেশের মাশরুম  খাওয়ার অবস্থা লক্ষ‍্য করলে আবার  দেখা যায় যে দেশ যত বেশি উন্নত সে দেশের মানুষ  ততবেশি মাশরুম  খায়।বর্তমানে প্রায় ১০০টি দেশে মাশরুম  চাষ হয়, যার ৭০ভাগ চাষ হয় চীনে।উৎপাদিত মাশরুমের ৮৫ভাগ ব‍্যবহৃত হয় ৬টি দেশে।যথা-যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি,ইটালি, ফ্রান্স,যুক্তরাজ‍্য ও কানাডায়।বাকি ১৫ভাগ মাশরুম  খায় অবশিষ্ট  বিশ্বের মানুষ।মাশরুমের পুষ্টি  ও ঔষধিগুণের কারনে এর চাহিদা  দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।প্রাচীনকাল থেকেই  বিভিন্ন  জাতি ও ধর্মের মানুষের কাছে মাশরুম  একটি  জনপ্রিয়  খাদ্য  হিসেবে  পরিচিত।এতে খনিজ  পদার্থের পরিমাণ  মাছ ও মাংসের তুলনায় বেশি এবং  সচরাচর  আমরা যেসব সবজি খায় তার তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ



মাশরুমে আমিষের পরিমাণ আলু থেকে  দ্বিগুণ,টমেটো থেকে চারগুণ এবং  কমলালেবু থেকে  ছয়গুণ বেশী।হাদিস শরীফে মাশরুমকে বেহেশতী খাবারের  সঙ্গে  তুলনা করা হয়েছে( সহীহ বুখারী  এবং মুসলিম শরীফ)।

১|মাশরুমে আমিষ, শর্করা,চর্বি,ভিটামিন ও মিনারেল এমন সমন্বিতভাবে  আছে যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে  দেয়।ফলে গর্ভবতী  মা ও শিশু নিয়মিত  মাশরুম  খেলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা  বৃদ্ধি  পায়।






২| এতে চর্বি ও শর্করা কম থাকায় এবং  আঁশ বেশি  থাকায় ডায়াবেটিস  রোগীদের আদর্শ খাবার  হিসেবে  গণ‍্য করা হয়।


৩|রক্তের কোলেস্টেরল  কমানোর অন‍্যতম উপাদান  "ইরিটাডেনিন" "লোবাষ্টটিন" এবং  এনটাডেনিন মাশরুমে থাকায় এটি হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপ  নিরাময় করে।


৪|মাশরুমে প্রচুর  ক‍্যালসিয়াম,ফসফরাস ও ভিটামিন -ডি থাকায় শিশুদের হাড় ও দাঁত গঠনে বিশেষ  ভূমিকা  রাখে।


৫|প্রচুর ফলিক এসিড ও আয়রণ সমৃদ্ধ বিধায় মাশরুম  রক্তশূন‍্যতা দূরীকরণে সহায়ক ভূমিকা  রাখে।
৬|এতে লিংকজাই-৮ নামক পদার্থ থাকায় হেপাটাইটিস-বি জন্ডিস প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে।
৭|মাশরুমের বেটা-ডি,গ্লুকেন,ল‍্যাম্পট্রোল,টারপিনওয়েড এবং  বেনজোপাইরিন ক‍্যান্সার ও টিউমার প্রতিরোধক।

৮|মাশরুমের ট্রাইটারপিন এইডস প্রতিরোধক হিসেবে  ব‍্যবহৃত হয়।
৯|মাশরুমের এডিনোসিন ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধক।
১০|কান মাশরুম  চোখ ও গলা ফোলায় উপকারী।
১১|বিভিন্ন প্রকার এনজাইম সমৃদ্ধ  মাশরুম  আমাদের  পেটের পীড়ায় উপকারী।
১২|মাশরুমে সালফার সরবরাহকারী এমাইনো এসিড  থাকায় তা চুল পড়া ও চুল পাকা প্রতিরোধ করতে  সক্ষম।
মাশরুম  অত‍্যন্ত সুস্বাদু  সবজি।প্রাচীনকাল থেকে  মানুষ  এই সুস্বাদু  মাশরুমের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে খাদ‍্য তালিকায়  একে অগ্রাধিকার  দিয়ে  আসছে।এমনকি রাষ্ট্রীয় অতিথিদের আপ‍্যায়নে ব‍্যবহৃত হতো অসাধারণ  লোভনীয়  স্বাদের মাশরুম।বিশ্বব‍্যাপী ভোজন রসিকেরা মাশরুমকে স্বর্গীয় খাবারের  সঙ্গে  তুলনা করে।মাশরুম শুধু  নিজেই সুস্বাদু  খাবার  নয় বরং মাশরুমকে অন‍্য খাবারের  সঙ্গে  ব‍্যবহার করলে সেই খাবারের  স্বাদ বহুগুণে  বৃদ্ধি  পায়।তাই মাশরুম কে বলা হয়  পরশস্বাদু খাবার।
মাশরুমের স্বাদ ও পুষ্টি  দুটোই  অসাধারণ।যে কারণে খৃষ্টপূর্ব৫০০সন থেকে মানুষ  মাশরুমকে সুস্বাদু  খাবার  হিসেবে গ্রহন করে আসছে।প্রাচীন ফারাও সম্রাট মাশরুম 
কে দেবতার খাবার  হিসেবে  মনে করতেন। আর গ্রীকরা মনে করতেন ঝুঁকিপূর্ণ  লড়াইয়ের  ময়দানে  জয়লাভের জন‍্যে প্রয়োজনীয় শৌর্যবীর্য যোগাতে পারে মাশরুম।চাইনিজরা'অমরত্বের সন্ধানে ' মাশরুম  খাওয়া  শুরু করেন।হাদিস শরীফের সূত্র হতে জানা যায়,মাশরুম হচ্ছে  মান্নার নির্যাস থেকে  উৎপন্ন  অত‍্যন্ত উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন খাবার।ছত্রাকবিদদের মতে মাশরুম  থেকেই  মাইকোলজি শব্দটি এসেছে।পুষ্টিগুণের কারণে মাশরুম কে অধিকাংশ মরণব‍্যাধির প্রতিরোধক এবং  নিরাময়ক হিসেবে স্বাস্থ‍্যা বিজ্ঞানীরা মনে করছেন।যে সমস্ত কারনে মাশরুম  বিভিন্ন  জটিল  রোগের প্রতিরোধক এবং নিরাময়ক হিসেবে  কাজ করে।

উৎপাদন  প্রক্রিয়ায় হারাম ও নাজায়েজ কোন কিছুর অবলম্বন ও সহযোগিতা  ছাড়া উৎপাদিত মাশরুম  হালাল,এটা নিয়ে  কোন সন্দেহ  নেই।স্বাস্থ‍্যাবিজ্ঞানীরা শরীরে পুষ্টির  যোগান দিতে প্রতিদিনের খাবারে মাশরুম  যুক্ত করার পরামর্শ  দিয়ে  থাকেন।মাশরুম আমাদের  দেশের সবজির ঘাটতি পূরণে সহায়ক।
অনেকেই  মাশরুম  খাননা রুচিতে না ধরার কারনে।আবার অনেকেরই  ধারণা মাশরুম  খাওয়া  বুঝি হারাম।কারন এটা দেখতে ব‍্যাঙের ছাতার মতো।
আসলে এটা একেবারেই  অমূলক  ধারণা।কারন মাশরুম  আর ব‍্যাঙের ছাতা এক জিনিস  নয়।ব‍্যাঙের ছাতা যেখানে - সেখানে অপরিচ্ছন্ন ময়লা আবর্জনার ভাগাড়ে গজায়।ফলে এর বেশকিছু  প্রজাতি হয় বিষাক্ত।কিন্তু বানিজ‍্যিকভাবে উৎপাদিত মাশরুম পরিচ্ছন্ন  পরিবেশে,টিস‍্যু কালচার  পদ্ধতিতে  চাষ করা হয়,তাই এটা স্বাস্থ‍্যকর।
কুরআন-হাদিসে কোথায় 

Post a Comment

0 Comments