খুব মনোজগ দিয়ে পড়লেই আশা করি আপনার সমাধান পাবেন ইনশাল্লাহ
কেওড়া গাছ,
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে ভরপুর বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল সুন্দরবনের সবচেয়ে সৌন্দর্য্যমণ্ডিত গাছ হলো কেওড়া গাছ।
মাঝারি আকৃতির গাছটি ঝোপালো হয়ে থাকে।লবণাক্ত সহিষ্ণু এই গাছে প্রচুর ফল হয়।যা কেওড়া ফল নামে পরিচিত।
বাংলাদেশের সুন্দরবনের অতি পরিচিত একটি ফল,
কেওড়া ফল আকারে ছোট ও গোলাকার।এই ফল টক বা অম্ল স্বাদের হয়।দেখতে সবুজ বাইরের শাঁস সাধারণত খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়।সুন্দরবন ও তার পাশ্ববর্তী এলাকার মানুষ এই ফল থেকে সুস্বাদু খাবার তৈরী করে থাকে। সাধারণত শহরাঞ্চলে বিভিন্ন রকম ফাস্টফুড ও বিরিয়ানি তৈরীতে ব্যবহার করা হয় এই কেওড়ার ফুল থেকে তৈরী কেওড়ার জল।
কেওড়া ফল পাওয়া যায় আষাঢ়,শাবন ভাদ্রমাসে,
আষাঢ়,শ্রাবণ থেকে ভাদ্র মাস পযর্ন্ত কেওড়া ফল পাওয়া যায়।
কেওড়া ফলের ঔষধীগুণ,
সুন্দরবনের মধুর একটি বড়ো অংশ আসে কেওড়া ফুল থেকে।ফলটির অনেক ঔষধীগুণ রয়েছে।তাই মনে করা হয়
ফলটি শরীর ও মনকে সতেজ রাখার সাথেসাথে বিভিন্ন রোগ
প্রতিরোধে কার্যকরী।
☆☆কেওড়া ফল সারাবছর সংরক্ষণের পদ্ধতি,
ভালো সবুজ কেওড়া ফল বাছাই করে প্রথমে এর মুখের শক্ত
অংশটি ফেলে দিন।ফলগুলো ভালোভাবে ধুয়ে একটি পাত্রে
অল্প পানি দিয়ে সিদ্ধ করুন,যতোক্ষণ না এটার মাংসল অংশটা ফেটে যায়।তারপর চুলা থেকে নামিয়ে নিন হয়ে গেলে
খেয়াল রাখতে হবে ভেতরের বিচি যাতে সেদ্ধ হয়ে না যায়।যদি সেদ্ধ হয়ে যায় তাহলে খেতে তেতো লাগবে।
এবার একটি পাত্রে ঢেলে ভেতরের বিচিগুলো হাত দিয়ে ফেলে দিতে হবে।
এবার মাংসল অংশটা একটা সুতির পাতলা কাপড়ে নিয়ে গোল পুটলি তৈরী করতে হবে এবং হাতে চাপ প্রয়োগ করতে হবে।দেখা যাবে,কেওড়া ফলের কাথ নিচের পাত্রে পড়ছে। এই
কাথগুলো ঠান্ডা করে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিলে সারাবছর সংরক্ষণ ও ব্যবহার করা যায়।
অনেক ফলের ভিড়ে একটি বুনো ফল হলো এই কেওড়া,
কেওড়া ফল ডায়াবেটি ভালো করে,
এই
ফলটি হতে পারে আমাদের খাদ্য তালিকার একটি অন্যতম উপাদান এবং এটি একটি পরিবারকে পুষ্টির জোগান দিতে পারে।ডায়াবেটিসসহ অনেক মারাত্মক রোগের প্রতিরোধেও
টনিকের মতো কাজ করে এই ফলটি।সুন্দরবনের উপকূলের
লোকেরা এই ফলের সঙ্গে মুসুর ডাল ও চিংড়ি দিয়ে রান্না করে
খায়।তাছাড়া কেওড়া ফলের চাটনি বা টকও রান্না করা যায়।
কেওয়া ফলের উপকারিতা,
১. পেটের রোগ সারাতে কেওড়া ফল উপকারী।বিশেষ করে বদহজমে।
২. কেওড়া ফলে রয়েছে প্রায় ১২%শর্করা,৪% আমিষ, ১.৫%
ফ্যাট,প্রচুর ভিটামিন বিশেষত ভিটামিন সি রয়েছে।
৩. কেওড়া ফলে পলিফেনল,ফ্লাবোনাইট,এনথোসায়ানিন,এন্টি-অক্সিডেন্ট,
আনস্যাচুরেটেড ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসিডে পরিপূর্ণ।চায়ের মত
এই ফলটিতে ক্যাটিকিনসহ বিভিন্ন ধরণের পলিফেনল প্রচুর
পরিমাণে রয়েছে।বাংলাদেশে প্রাপ্ত ফলগুলোর মধ্যে আমলকীতে সবচেয়ে বেশী পলিফেনল আছে।তারপরই কেওড়া ফলের অবস্থান।পলিফেনল শরীরে ডায়াবেটিস, ক্যান্সার,আর্থ্রারাইটিস,হৃদরোগ,এলার্জি,চোখের ছানি,বিভিন্ন
ধরণের প্রদাহসহ বিভিন্ন রোগ সৃষ্টিতে বাধা প্রদান করে থাকে।
কেওড়া ফলে আমলকী,আপেল ও কমলালেবুর তুলনায় বেশি পরিমাণে পটাশিয়াম,আয়রণ,ক্যালসিয়াম,ফসফরাস,ম্যাগনেসিয়াম ও
জিংক রয়েছে।
৪. কেওড়া ফলে রয়েছে ডায়রিয়া ও ডায়াবেটিস প্রতিরোধী
ও বিভিন্ন ব্যথানাশক গুণাগুণ।ফলটি ডায়রিয়া,আমাশয় ও
পেটের পীড়ার জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়াকে কার্যকরীভাবে দমন করতে পারে।
৫. এই ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পালমেটিক অ্যাসিড।
এসকরবাইল পালমিটেড ও স্টিয়ারিং অ্যাসিড।যা খাদ্যশিল্পে
খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে এবং তৈরী খাদ্য সংরক্ষণে ব্যবহৃত হয়ে
থাকে।
উপকূলীয় এলাকার অনাবাদী লবণাক্ত জমিতে ফলটি ব্যাপকভাবে জন্মানোর উদ্যোগ নিলে প্রান্তিক এলাকার লোকজনের বাড়তি আয়ের উৎস হিসেবে কাজ করবে এবং
জনস্বাস্থ্যও সুরক্ষিত থাকবে।
☆☆গোলাপ জল তৈরী হয় গোলাপ ফুলের নির্যাস থেকে।আর কেওড়া জল তৈরী হয় কেওড়া ফুলের নির্যাস থেকে।তবে
খাবারে এদের ব্যবহার একি কারনে করা হয়।অর্থাৎ খাবারকে সুগন্ধিযুক্ত করতে।তবে খুবই সামান্য পরিমাণে।
কেওড়া জলের দাম,
কেওড়া জলের দাম খুবই কম।মাত্র ২০-৩০টাকার মধ্যে।যেকোন বড় মুদির দোকান ও সুপারশপে পাওয়া যায়।
কেওড়া জল স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।এটি ক্যান্সার
নিরাময়ে সাহায্য করে।মানসিক প্রশান্তি আনে।শুষ্কত্বকের
রূপচর্চায় দারুণ কার্যকর এই কেওড়া জল।
বিরিয়ানি,ডেজার্ট,পানীয়,মাংস,জিলাপী বিভিন্ন ধরণের খাবারের স্বাদ বৃদ্ধিতে ব্যবহার হয়
0 Comments