খুব মনোজগ দিয়ে পড়লেই আশা করি আপনার সমাধান পাবেন ইনশাল্লাহ
মেথি হচ্ছে একধরনের বীজ,
মেথি আমরা মশলা হিসেবে ব্যবহার করে থাকি।মুদিদোকান,মশলার দোকানে মেথি পাওয়া যায়।রান্নায় পাঁচফোড়ন হিসেবে,কাচা চিবিয়ে খেয়ে,সিদ্ধ করে,রঙচায়ের সঙ্গে খাওয়া যায়।
মেথির উপকারিতা

১. জ্বর,সর্দি,কাশি ভালো করার জন্য মেথি উপকারী।
মেথি চুলের উপকারিতা
২. নারকেল তেল মেথিসহ ফুটিয়ে ঠান্ডা করে চুলে লাগালে চুলপড়া বন্ধ হয়।
স্তন ক্যান্সার পুরুষদের
৩. স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় নিয়মিত মেথি সেবন।
গ্যাস্ট্রিকের জন্য মেথি খাওয়ার নিয়ম
৪. গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করে।
টনসিলের ঘরোয়া চিকিৎসা
৫. টনসিলের সমস্যা দূর করে মেথি।
ডায়াবেটিসে মেথির উপকারিতা
৬. ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মেথি একটি ভালো পথ্য।
উচ্চ রক্তচাপ কমানোর ঘরোয়া উপায়
৭. যাদের উচ্চরক্তচাপ ও অতিরিক্ত কোলেস্টেরল আছে,তাদের জন্য মেথি খুব ভালো।
পুরুষের যৌন দূর্বলতা দূর করতেও মেথি খুবই কার্যকরী।মেথি রোদে ভালোভাবে শুকিয়ে পাউডার করে নিয়ে হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে সকাল ও বিকালে খাওয়া যেতে পারে ভালো ফলাফল পাবার জন্য।
☆☆মেথি খাওয়ার সঠিক নিয়ম
অনেকেই মেথি গুড়ো করে খেয়ে থাকেন।কিন্তু মেথি গুড়ো করে খেলে এর বেশিরভাগ পুষ্টি নষ্ট হয়ে যায়।মেথি বীজে পর্যাপ্ত পরিমাণে অদ্রবনীয় ফাইবার পাওয়া যায়। এটি হজমের পক্ষে ভালো এবং সঞ্চিত টক্সিনগুলো মল মূত্রের মাধ্যমে দেহ থেকে বের করে দেয়।টক্সিন কিন্তু প্রতিনিয়তই আমাদের দেহে জমা হচ্ছে।তাই আমাদের ও প্রতিনিয়ত এটি অপসরন করা উচিত।তা না হলে শরীরে বিভিন্ন ধরণের রোগের সৃষ্টি হয়।
১. অঙ্কুরিত মেথি বীজ খাওয়া :
মেথি ভিজিয়ে রাখতে হবে পরিষ্কার পানিতে। একদিন খাওয়ার জন্য এক চা চামচ পরিমাণ মেথি ভিজিয়ে রাখতে হবে।কিন্তু শুধুমাত্র একরাত ভিজিয়ে রাখলে মেথি অঙ্কুরিত হবেনা।এর জন্য দুই থেকে তিনরাত মেথি ভিজিয়ে রাখতে হবে।তবে পরিপূর্ণ পানিতে
ভিজিয়ে রাখতে হবে একরাত,তারপর অল্প পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে।অর্থাৎ যদি ডুবো পানিতে মেথি ভিজিয়ে রাখেন,তাহলে কিন্তু মেথি অঙ্কুরিত হবেনা।বরং একরাত ভেজানোর পরে এই ভেজা মেথিটা একটা আলাদা পাত্রে তুলে রেখে ঢেকে রাখুন।দেখবেন মেথি অঙ্কুরিত হয়েছে। অঙ্কুরিত মেথি বীজ খুব ভালোভাবে চিবিয়ে চিবিয়ে খেয়ে নিতে পারেন। আর মেথি ভিজানো যে পানিটা পাবেন সেটাও তাৎক্ষণিক খেয়ে নিতে পারেন। অঙ্কুরিত মেথি বীজ ও মেথি পানি দুটোই আপনার শরীরের জন্য উপকারী।তবে মেথি বীজ খাওয়ার আগে অবশ্যই সকালে বাসিমুখে পর্যাপ্ত পরিমাণে হালকা গরম পানি খাবেন।যাদের দীর্ঘদিন ধরে হার্টের রোগ আছে বা কিডনি সংক্রান্ত জটিলতায় ভুগছেন তারা নিজেদের
বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী দৈনিক যতটুকু পানি পান করেন,তার তিনভাগের একভাগ পানি সকালে বাসিমুখে পান করবেন। এর ত্রিশ মিনিট পরে আপনি মেথি বীজগুলো খুব ভালোভাবে চিবিয়ে খেয়ে নিবেন।তার ত্রিশ মিনিট পরে আপনি সকালের নাস্তা করুন। এই গেল আমাদের প্রথম
পদ্ধতি।
জ্বর সর্দি কাশি মেডিসিন নাম
২. যারা ঠান্ডা,কফ,কাশি এই ধরণের রোগে বারোমাস ভুগছেন।গলা খুশখুশ করছে,সবসময়ই কোল্ড এলার্জির প্রবণতা অনুভব করছেন।
এভাবে যদি আপনি টানা দুইমাস সেবন করতে পারেন,তাহলে আপনার শরীরের এইসব রোগ যত পুরাতনই হোক না কেন একদম ভেতর থেকে দূর হয়ে যাবে।দ্বিতীয়বার আর কখনো ফিরে আসবেনা।অনেকেই আছেন দুই তিন খেয়ে উপকার পেলেই বন্ধ করে দেন।কিন্তু আপনি এটি খাওয়া বন্ধ না করে এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখুন।তাহলেই দেহ থেকে রোগ একেবারে গোড়া থেকে যাবে।
হার্ট ভালো রাখার উপায়,
কিডনি ভালো রাখার উপায়,
লিভার ভালো রাখার উপায়,
৩. হাই ব্লাডপ্রেসার,হাই
কোলেস্টেরল,অনিয়ন্ত্রিত ওজন, অনিয়ন্ত্রিত খাওয়া-দাওয়া।সেইসঙ্গে ধূমপান করছেন,কেউ কেউ মদ্যপান করছেন।পাশাপাশি আপনার জীবনযাত্রার মান কোনভাবেই সঠিক নয়। অর্থাৎ যেভাবে জীবনযাপন করলে একজন সুস্থ থাকতে পারে,তার কোনটিই আপনি করছেননা।
বেশি বেশি চা খাচ্ছেন।হয়তো আপনি দুধ চা,দুধ কফি এই ধরণের খাবারের প্রতি আসক্ত।তাহলে আপনি যদি সকালে মেথি চিবিয়ে বা মেথি ভিজানো পানি নাও খেয়ে থাকেন,তবে দিনে তিনবার করে মেথি চা পান করুন।মেথি চা পান করার জন্য আপনাকে দুই টেবিল চামচ মেথি নিতে হবে আর একগ্লাস বা২৫০ মিলিলিটার পানি নিতে হবে।এবার পানিতে মেথি হালকা আঁচে ফুটিয়ে নিতে হবে।পানি অর্ধেক হয়ে গেলে মেথি ছেকে ফেলে দিতে হবে। এবার হালকা গরম অবস্থায় মেথি চা পান করুন। এটি যেকোন সময় আপনি পান করতে পারেন।তবে অবশ্যই যেকোন ভারি খাবার খাওয়ার ত্রিশ মিনিট আগে বা পড়ে খাবেন। এভাবে যদি খেতে থাকেন তাহলে আপনার এই সকল রোগ একেবারেই দূর হয়ে যাবে।
আর মাঝ বয়সে গিয়ে যে ধরণের রোগ
হার্ট,কিডনি,লিভার,
ফুসফুসের জটিলতা দেখা দেয়, এই ধরণের জটিলতায় আপনি কখনো পড়বেন না।
গ্যাসের ব্যথা কমানোর উপায়
৪. সবসময় পেটের ভিতর
অস্বস্তি,গ্যাস,অ্যাসিডিটি,অম্বল,
বুক জ্বালাপোড়া করা,পেটের মধ্যে ভার,কোন খাবার খেলেই গলা পযর্ন্ত উঠে আসছে মনে হওয়া,ঢেকুর উঠছে,মুখ তেতো
হয়ে যাচ্ছে,কোষ্ঠকাঠিন্য আছে,পাইলস বা অর্শ আছে।এই ধরণের বহু রোগে মানুষ বহুদিন থেকেই আক্রান্ত।এমন অনেকেই আছেন যারা গ্যাস নিয়ন্ত্রণের জন্য দিনে দুইবার করে এন্টাসিড জাতীয় ঔষধ খাচ্ছেন। এভাবে যদি ঔষধ খেতে থাকেন তবে অবশ্যই আপনার লিভারের রোগ হবে।
এজন্য ঔষধ খাওয়া বন্ধ করে দিন এবং মেথি পানি দিনে দুই
বার খান।দুই থেকে তিন টেবিল চামচ মেথি ভিজিয়ে রাখতে হবে রাতে।এটা প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য বলছি।বয়স কম হলে এক থেকে দেড় চামচ ভিজালেই চলবে।এই মেথি একগ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রাখুন।সকালবেলা বাসিমুখে পর্যাপ্ত হালকা গরম পানি পান করুন।তার ত্রিশ মিনিট পর আধাগ্লাস মেথি ভেজানো পানি খেয়ে নিন।বিকেলবেলা আপনার পেট অপেক্ষাকৃত খালি হলে ছেঁকে বাকি পানিটা খেয়ে নিন।তার আধাঘণ্টা পর নাস্তা খান। এভাবে করতে থাকুন,তাহলে একসময় দেখবেন আপনার সকল ধরণের হজমতন্ত্রের সমস্যা,পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা একদম দূর হয়ে গেছে।যা খাবেন তাই হজম হবে এবং তাই শরীরে কাজে লাগবে।এনার্জিতে পরিণত হবে।ফ্যাট থাকবে না কখনো।
☆☆মেথি খাওয়ার নিয়ম কি
কাসুরি মেথি অনেক পুষ্টিকর একটি মসলা।বিভিন্ন ধরণের কাবাব তৈরী ছাড়া ও ভাজাপোড়া,সবজি,ডালসহ অনেক খাবারেই ব্যবহার করা হয়।বাজার থেকে মেথি শাক কিনে এনে তার পাতাগুলো ডাল থেকে আলাদা করে নিন।বাজারে
না পেলে সুপার শপগুলোতে অবশ্যই পাবেন মেথি শাক। এবার ভালোভাবে পাতাগুলো ধুয়ে,ভালোভাবে পানি ঝরিয়ে নিন।তারপর রোদে শুকিয়ে নিন।অর্থাৎ পাতাগুলো শুকিয়ে মচমচে করে নিন।মজার বিষয় হচ্ছে,কাচা অবস্থায় পাতাগুলোতে কোন গন্ধ ছিলনা।কিন্তু শুকাবার পর পাতাগুলো থেকে সুন্দর গন্ধ ছড়ায়। এবার মচমচে পাতাগুলো হাত দিয়ে গুড়ো করে নিন। আবার চাইলে ব্লেন্ডার দিয়ে ও গুড়া করে নিতে পারেন। আর এই গুড়া কৌটায় ভরে সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন দেড় থেকে দুইবছর পযর্ন্ত। অনেক সুগন্ধিযুক্ত ও পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ এই মসলা।তাই সহজে বাড়িতে তৈরী করে বিভিন্ন খাবারে ব্যবহার করুন।
☆☆মেথি খাওয়ার অপকারিতা
যেকোন কিছু খাবারের সীমা অতিক্রম করলেই তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।মেথির বেলায়ও সেটাই ঘটে।মেথি
খাওয়ার স্বাভাবিক মাত্রা হচ্ছে দৈনিক ১০ গ্রাম বা ২ চা চামচ।সকালে ৫ গ্রাম আর বিকেলে ৫ গ্রাম। এভাবে খেলে কারোই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেবে না।তবে যাদের অতিরিক্ত ঘাম হয়,গরম সহ্য করতে পারেন না,তারা এটা একেবারেই খাবেননা।কারন মেথিতে এমন একটি উপাদান আছে,যা শরীরের উত্তাপ বাড়িয়ে দেয়।তাই যারা গরম সহ্য করতে পারেননা,তারা এটি খেলে অনেক জটিলতায় ভুগবেন।
গর্ভবতী নারীরা মেথি খাওয়া এড়িয়ে চলবেন।তা নাহলে অসময়ে গর্ভপাত হতে পারে।
হার্টের রোগীরা মেথি না খাওয়াই ভালো।ব্লাডের মধ্যে যাদের অতিরিক্ত কোলেস্টেরল রয়েছে তারা খাবেননা।
এনিমিয়ার রোগীরা খাবেননা।কারন মেথি শরীরে আয়রন শোষণের মাত্রা কমিয়ে দিয়ে নানারকম জটিলতার সৃষ্টি করে।
দীর্ঘমেয়াদি ডায়রিয়া বা আমাশয়ে যারা ভুগছেন,তলপেটে প্রচণ্ড ব্যথা হয়, অতিরিক্ত অ্যাসিডিটিতে ভুগছেন,বুক জ্বালাপোড়া হয় তারা মেথিকে এড়িয়ে চলবেন।তবে যারা মেথি খেলে সমস্যা হয় তারা কিন্তু অনায়াসেই মেথি শাক বা মেথি পাতার চূর্ণ খেতে পারেন এবং রান্নায় ব্যবহার করতে পারেন। আর তাতে উপরোক্ত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো দেখা যায়
না।কারন এতে এমন একটি উপাদান আছে যা আমাদের শরীরকে ঠান্ডা রাখে।অপরদিকে মেথি খেলে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়।
0 Comments