মানবদেহের সাত চক্র
![]() |
ইমেজে ক্লিক করুন |
মানবদেহের সাত চক্র/৭চক্র/কুণ্ডলিনী জাগরণ পদ্ধতি সাত চক্র খুলে গেলে এটা হতেই হবে/সাত চক্রের রহস্য জাদের ওজানা/
মানবদেহের সাত চক্র/৭চক্র/কুণ্ডলিনী জাগরণ পদ্ধতি
বলা হয় যে,আমাদের শরীরে মোট সাতটি চক্র আছে।আর এই সাতটি চক্রই বন্ধ থাকে মানে ডি-এক্টিভেট থাকে।আমাদের শরীরের একেক স্থানে থাকা এই সাতটি চক্রের মধ্যেই আছে অফুরন্ত অলৌকিক শক্তি।যার কোন সীমা নেই।
মানুষের জীবন ৭ চক্র
কিন্তু এই সাতটি চক্রই জন্মগতভাবে বন্ধ থাকে।চলুন জেনে নিই সে সাতটি চক্র কি?যার মধ্যে থাকে অসীম শক্তি।সবার
প্রথমে শরীরের একদম নিচে যে চক্র আছে তার নাম হলো মূলাধার চক্র।আমাদের শরীরের সাতটি চক্রের মধ্যে শুধু
মূলাধার চক্রই একটু আধটু জাগ্রত।বাদ বাকি সব চক্রই বন্ধ থাকে।অনেক সাধনার পরই কেউ সেসব চক্রকে খুলতে পারে।মূলাধার চক্রের পরে আমাদের শরীরে আছে স্বাধিষ্ঠান চক্র।তারপর আছে মনিপুর চক্র।এরপর অর্থাৎ চার নাম্বারে আছে অনাহাদ চক্র।তারপর আছে বিশুদ্ধ চক্র।ছয়
নাম্বারে আছে আজ্ঞা চক্র।সাত নম্বরে আছে সহস্রার চক্র।এই চক্র একদম আমাদের মাথার উপর অবস্থিত থাকে।আমাদের
শরীরের সাতটি চক্রই প্রচণ্ড শক্তিধর।
এদের প্রত্যেক চক্রের শক্তি আলাদা আলাদা।আপনি যদি অল্পস্বল্পও ধর্মগ্রন্থ পড়ে থাকেন,তাহলে আপনি এই ব্যাপারে অবশ্যই শুনেছেন এবং
হয়তো এটা বিশ্বাস ও করেন।কিন্তু প্রাচীনকালের অনেক মানুষ কিংবা মুনিঋষিরা এইসব চক্রের কথা জানতো।এইসব চক্রকে তারা উন্মুক্ত ও করেছিল।কিন্তু এবার কথা হলো, মানুষ কেন কুন্ডলিনীসহ সাত চক্রকে জাগ্রত করতে চায়।যারা যারা কুন্ডলিনী সম্পর্কে একটুও জানেন,তারা এই বিষয়ে
কুন্ডলিনী চক্র
অবশ্যই অবগত যে, কুন্ডলিনী চক্র জাগ্রত করলে কি হয় বা এর শক্তি কি কি?
আর যেহেতু কুন্ডলিনীর শক্তি প্রচণ্ড,তাই অনেকেই একে জাগ্রত করতে চেষ্টা করেন।আর তারা এইও জানে যে,একবার এই সাতচক্র ও কুন্ডলিনী জাগ্রত হয়ে গেলে মানুষের থার্ড আই বা তৃতীয় নেত্রও খুলে যায়।এক্ষেত্রে থার্ড আই খোলার জন্য ব্যক্তিকে আর আলাদাভাবে ধ্যান বা
মেডিটেশন করতে হয় না।
থার্ড আই খোলার সহজ উপায়
সাতচক্রের এক্টিভেটের সঙ্গে সঙ্গে
অটোমেটিক থার্ড আই ও খুলে যায়।এর ফলে মানুষ তার mind কে ও নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।তার শরীরকে দিয়ে সে যা ইচ্ছে তাই কাজ করাতে পারে।সেক্স এনার্জি সেই ব্যক্তির অধীন হয়ে যায়।ব্যক্তি এমন সব সুপার ন্যাচারাল শক্তির অধীন হয়ে যায় যে,সে তার আত্মাকেও শরীর থেকে বের করে
ফেলতে পারে। মানে অন্যের মনকে পড়ার ক্ষমতা ও অর্জন করতে পারে।
সাতচক্রের অধিকারী ব্যক্তি ভবিষ্যৎ দেখতে পারে বা ভবিষ্যতে নিশ্চিত কি কি হতে
চলেছে তাও জানতে পারে।এমনকি সেই ব্যক্তি আত্মাকে তার
শরীর থেকে আলাদা করে নিজেই নিজের শরীর দেখতে পারে।আর আপনি তখনই বুঝে যাবেন যে,আপনি আর আপনার শরীর দুইজনই ভিন্ন।আপনি দূর থেকে কাউকে দেখেও বলে দিতে পারেন যে তার মনে কি চলছে বা সে কি করতে যাচ্ছে।আপনি আর তখন সাধারণ মানুষ থাকবেন না।
আপনি সাধারণ থেকে হয়ে উঠেন একজন অসাধারণ অলৌকিক শক্তিধর ব্যক্তি।আপনি অটোমেটিক এই ব্রক্ষ্মাণ্ড বা মহাবিশ্বকে বুঝতে শুরু করবেন।সাতটি চক্র একদম এক্টিভ হয়ে গেলে আপনার mind এ অফুরন্ত এনার্জি প্রবেশ করতে থাকবে।কিন্তু আফসোস আপনার সাতচক্রকে এক্টিভ করার পরও আপনি হয়তো সেই অলৌকিক শক্তিকে কাজে লাগাতে পারবেন না।কারন আপনি আর সেরকম নরমালি থাকবেন না,পুরোপুরি বদলে যাবেন।
কুন্ডলিনী জাগ্রত
আপনি হয়তো ভাবছেন যে,কুন্ডলিনী জাগ্রত করলে যদি এতো শক্তিধর হওয়া যায়,তাহলে আমি ও জাগ্রত করবো কুন্ডলিনী শক্তিকে।কিন্তু
কুন্ডলিনী শক্তিকে জাগ্রত করা অত সহজ কাজ নয়।এর জন্য প্রয়োজন প্রচুর সাধনা,প্রচুর ধ্যানের।কিন্তু কুন্ডলিনী শক্তিকে জাগ্রত করার পরও রয়েছে অনেক সমস্যা।এর কারন হলো,আপনার ভেতরে যে এতো বড় শক্তি রয়েছে সেটা
আপনার শরীর জানেই না।
আপনি নিজেই জানেন না যে,আপনার ভেতরে কত অলৌকিক শক্তি আছে।এবার হঠাৎ করে আপনি যদি আপনার কুন্ডলিনী শক্তিকে জাগ্রত করে ফেলেন,তাহলে কী আপনার mind সেই অফুরন্ত শক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।আমাদের শরীর এবং মন এই শক্তিকে
নিয়ন্ত্রণ করার মত অবস্থায় থাকে না।এই শক্তিকে পাওয়ার আগে শারীরিক এবং mind এর লেভেলে আগে নিজেকে প্রস্তুত করে নিতে হয়।আপনি একটা দিক লক্ষ্য করুন।আমাদের কাছে শুধু একটু আধটু এনার্জি আছে।আর এটাকেই আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনা।আর আমরা ছোটখাট কোন ব্যাপারেই রেগে যায়।নিজের উপর থেকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলি।আমরা ছোটখাট সমস্যার ফলেই টেনশনে পড়ে যায়।আবার মাঝেমধ্যে হতাশায়ও ভুগতে থাকি।আর এর থেকেই শুরু হয় নানান ধরনের সমস্যা।আমরা আমাদের সামান্য এইটুকু এনার্জিকে নিয়ন্ত্রণ করতে
পারিনা।আর হঠাৎ করেই যদি আমরা অলৌকিক এই কুন্ডলিনী শক্তিকে জাগ্রত করে ফেলি,তাহলে কি সেই শক্তি বা এনার্জিকে আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো।অবশ্যই সেই শক্তিকে আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো না।
আমরা আমাদের এইটুকু এনার্জি দিয়েই চিন্তা করি,চলি,ফিরি,কথা বলি,কাজ করি।অফিসের সমস্যা,পরিবারের সমস্যা,পড়াশোনা সংক্রান্ত সমস্যা।এতো কিছু সমস্যার মধ্যেও আমাদের মধ্যে অনেকেই
হয়তো এটা ভেবে নেন যে,এতো সমস্যার থেকে মরে যাওয়ায় ভালো।আমরা আমাদের এইটুকু এনার্জিকেই সামলাতে পারিনা।আমাদের এতোটুকু ও নিয়ন্ত্রণ নেই নিজের উপর।
আমাদের কুন্ডলিনী শক্তি যদি একবার জাগ্রত হয়ে যায় তাহলে আমাদের mind এ অফুরন্ত এনার্জি চলে আসবে।যার
ফলে আমাদের mind এর সেলস্ পাগলপ্রায় হয়ে যাবে।কারন আমাদের mind এর আগে এতো এনার্জি কখনোই বহন করেনি।আর এমনো হতে পারে যে,কুন্ডলিনী জাগ্রত হবার পরে কেউ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাগলও হয়ে যাবে।
আবার
মাঝেমধ্যে এমনও দেখা গেছে যে,কুন্ডলিনী শক্তি জাগ্রত হবার ফলে অনেকের অনেক ধরনের শারীরিক সমস্যা হয়।এর ফলে কিডনির সমস্যা ও হতে পারে।অনেকের আবার পিঠের ব্যথাও হয়।এছাড়া আরো অনেক ধরনের সমস্যাই হতে পারে।আপনি হয়তো এতোক্ষণে বুঝে গেছেন যে,কুন্ডলিনী শক্তিকে জাগ্রত করার ফলে যেমন প্রচুর শক্তিকে পাওয়া সম্ভব,তেমনি এর ফলে অনেক সমস্যারও সম্মুক্ষীণ হতে লাগতে পারে।কিন্তু তার মানে এই নয় যে,আপনি আপনার কুন্ডলিনীকে নিরাপদভাবে জাগ্রত করতে পারবেন না।আপনিও পারবেন আপনার কুন্ডলিনীকে
নিরাপদভাবে জাগ্রত করতে এবং তাতে কোন ক্ষতিও হবেনা।
কিন্তু এর জন্য প্রয়োজন সঠিক গাইডলাইনের।
আপনি যদি সত্যিই আপনার কুন্ডলিনীকে জাগ্রত করে অলৌকিক শক্তির
অধিকারী হতে চান তাহলে আপনি এমন কাউকে খুঁজে নিন, যে ব্যক্তি এইদিক দিয়ে এক্সপার্ট।কারন আপনি যদি কোন সঠিক গাইডলাইন দিয়ে আপনার কুন্ডলিনীকে জাগ্রত করতে
যান তাহলে আপনার এক্সপার্ট আগে আপনাকে সেরকমভাবে
তৈরী করে নিবে।
যাতে আপনি সেই অলৌকিক শক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন।আপনার এক্সপার্ট আপনাকে দিয়ে ধাপে ধাপে সবকিছুই করিয়ে নিবে,যেগুলো করা প্রয়োজন।
আর তাও সেগুলো সঠিক জায়গায় আর সঠিক সময়ে।আপনার এক্সপার্ট আপনাকে দিয়ে এমন কিছুই করাবে না
যাতে আপনার কোন ক্ষতি হয়।ইন্টারনেটে এমন অনেক কনটেন্ট পেয়ে যাবেন যেগুলো উল্লেখ করে যে আপনার কুন্ডলিনী শক্তিকে জাগ্রত করার উপায় কী?কিন্তু কুন্ডলিনী শক্তিকে জাগ্রত করার পূর্বে আপনি একবার ভেবে দেখবেন,
আপনি শারীরিক এবং মানসিক লেবেলে এর জন্য প্রস্তুত
হয়েছেন কিনা।তবে আমি আপনাদেরকে কিছু টেকনিক বলতে পারি।যাতে আপনি যদি চান সেগুলোর ব্যবহার করতে
পারেন।এখানে আমি আপনাদের এমন কোন টেকনিকের কথা বলবো না যাতে আপনার কোন ক্ষতি হয়।কিছু সাধারণ
টেকনিকের কথা অবশ্যই আপনাদের বলবো।এবার হয়তো আপনারা কুন্ডলিনী সম্পর্কে অনেক কিছু ধারণাই পেয়ে গেছেন।
অনেকেই হয়তো জানে না যে কুন্ডলিনী আসলে কী?
কুন্ডলিনী চক্র হলো আমাদের শরীরের অন্যান্য চক্রগুলোর একটা।আর এর শক্তির আসল উৎস হলো এনার্জি।আপনার যখন কুন্ডলিনী জাগরণ হয়ে যাবে তখন আপনি অনুভব করতে পারবেন আপনার শরীরের মধ্যে যেন অফুরন্ত এনার্জির বন্যা বয়ে যাচ্ছে।এই এনার্জির কোন শেষ নেই।তবে
হ্যা এটাও ঠিক যে,প্রতিটি মানুষের মধ্যেই আছে এই শক্তি।
কিন্তু সেটা সুপ্ত অবস্থায়।আপনার কুন্ডলিনী শক্তির এনার্জি
আপনার মধ্যেই আছে।কিন্তু সেটা লুকানো।আপনাকে শুধু সেই লুকানো শক্তিকে জাগ্রত করতে হবে।কুন্ডলিনী চক্রকে জাগ্রত করার জন্য আমাদের শরীরের অন্য চক্রগুলোও জাগ্রত করা দরকার।আসলে আপনি যখন কুন্ডলিনী চক্রকে
জাগ্রত করবেন তখন শরীরের অন্য চক্রগুলো এমনিই জাগ্রত হয়ে যায়।আপনার কুন্ডলিনী চক্র নিচের থেকে জাগ্রত
হতে হতে একদম মাথা পযর্ন্ত সেই এনার্জি যেতে থাকে।আর
একে একে সব চক্র জাগ্রত হতে থাকে।আর এই মহাবিশ্বের অসীম এনার্জির সঙ্গে সাধক মিলে যায়।অর্থাৎ এই মহাবিশ্বের সঙ্গে ব্যক্তি এমনভাবে মিশে যায় যে আর তার উপর মহাবিশ্বের কোন নিয়ম কাজ করেনা।ব্যক্তি এমন সব জ্ঞান অর্জন করে যেগুলো কোন সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়।
এমনকি পৃথিবীর সব বই পড়লেও তা কুন্ডলিনীর জ্ঞানের কাছে কিছুই নয়।কুন্ডলিনীর জাগরণের ফলে ব্যক্তির শারীরিক ক্ষুধা লুপ্ত হয়ে যায়।বেঁচে থাকার জন্য তার আর খাদ্যের কিংবা জলেরও প্রয়োজন হয় না।আমাদের শরীর এবং মন এই শক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করার মতো অবস্থায় থাকে না।
তাই এই শক্তি পাবার আগে শরীর এবং মনকে এর জন্য প্রস্তুত করে নিতে হয়।এবার কথা হলো কিভাবে আপনি নিজেকে mindএর পর্যায়ে আগে ঠিক করে নিতে পারেন।এর কোন নির্দিষ্ট লক্ষ্য নাই যে এগুলো করেই আপনি আপনার
mind কে কুন্ডলিনীর শক্তির জন্য প্রস্তুত করতে পারবেন।
প্রথমেই চেষ্টা করুন সবসময়ের জন্য নিজেকে শান্ত রাখতে।
আপনার মনকে আপনি যতোই শান্ত রাখার চেষ্টা করবেন, ততোই আপনি আপনার mind কে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।
কুন্ডলিনীকে জাগ্রত করার জন্য অনেক সময় এডভান্স লেভেলেও অনেক কাজ করতে হয়।কুন্ডলিনীকে জাগ্রত করার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো ধ্যান বা মেডিটেশন।তবে
একটু অন্যভাবে।আপনি নরমালি যেভাবে মেডিটেশন করেন
সেভাবে নয়।একটু ভিন্ন মাত্র।আপনি প্রতিদিন যেভাবে ধ্যানে
বসেন সেভাবে বসে পড়ুন।এবার আপনি ২-৩ মিনিটের জন্য
জোরে জোরে আর দ্রুত শ্বাস নিন এবং ছাড়ুন।আপনি হয়তো
ভাবছেন এতে কি হবে?মেডিটেশনের আগে এটা করলে আপনার mind থেকে সবধরনের চিন্তা নিমেষে উধাও হয়ে যাবে।আর সফল মেডিটেশন যদি করতে চান তাহলে আপনার mind কে সম্পূর্ণ চিন্তামুক্ত করতেই হবে।তাছাড়া আর উপায় নেই।মেডিটেশনে বসার আগে কানের মধ্যে ইয়ারপ্লাগ লাগিয়ে নিবেন।যাতে বাইরের শব্দ ভেতরে না যায়।
দ্রুত জোরে জোরে শ্বাস নেবার পর দেখবেন আপনার mind
থেকে অর্ধেক চিন্তা খালি হয়ে গেছে।এবার আপনি আবার দুই
থেকে তিন মিনিটের জন্য সাধারণ মেডিটেশন করুন।অর্থাৎ আপনি আপনার শ্বাস-প্রশ্বাসে মনোযোগ দিন।চোখ বন্ধ করে অনুভব করার চেষ্টা করুন কিভাবে আপনার শ্বাস ভেতরে যাচ্ছে আবার বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে। আপনি অনুভব করুন যে, আপনার শ্বাস একদম তলপেট থেকে ধীরে ধীরে উপরে উঠে নাক দিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসছে।আর নাক দিয়ে আপনার শ্বাস একদম তলপেট পযর্ন্ত চলে যাচ্ছে।যেন মহাবিশ্বের সব পজেটিভ এনার্জি আপনার ভেতরে প্রবেশ করছে।আর সব নেগেটিভ এনার্জি ভেতর থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে।এই অবস্থায় আপনি লক্ষ্য করবেন যে,অনেক চিন্তা আপনার মনের মধ্যে আসছে।আর নতুন নতুন অবস্থায় অনেক ধরনের চিন্তা মনে আসবেই।কারন আমাদের mind বাদড়ের মতো।যেকোন জায়গায় শান্ত হয়ে থাকতে পারেনা।আর সেজন্য প্রতিদিন আমাদের মনে মিনিমাম ৬০ হাজারের মতো চিন্তা আসে।যার মধ্যে বেশিরভাগই ফালতু চিন্তা।কিন্তু আপনি যখন কয়দিন পরপর মেডিটেশন করতে থাকবেন, তখন আর চিন্তা আপনার মনে আসবে না।আপনার মনে চিন্তা আসলে সেগুলোকে আসতে দিন।আপনি সেগুলোকে আটকাতে যাবেন না।আপনি যতোই আপনার চিন্তাগুলোকে আটকাতে যাবেন,ততোবেশি সেসব চিন্তা আরো বেশি করে আসতে থাকবে।আপনি আপনার চিন্তাগুলোকে আটকাবেন না।সেগুলোকে আসতে দিন।কিন্তু আপনি আপনার লক্ষ্য শ্বাস - প্রশ্বাসের দিক থেকে সরাবেন না।আপনি আপনার শ্বাস
-প্রশ্বাসে মনোযোগ রাখুন।কিছুক্ষণ এই স্টেজে থাকার পর দেখবেন আপনার mind থেকে সব ধরনের চিন্তা চলে গেছে।
আপনার mind এখন একদম খালি হয়ে গেছে।নতুন নতুন অবস্থায় আপনি হয়তো mind এর শূন্য লেভেলে যেতে পারবেন না।অর্থাৎ মনকে সম্পূর্ণ চিন্তাশূন্য করতে পারবেন না।তবে কিছুদিন করার পর আপনি অবশ্যই আপনার মনকে
চিন্তাশূন্য করতে পারবেন।এবার আপনি mind এর লেভেলে
চিন্তাশূন্য হবার পরে আপনি কল্পনা করুন যে,মূলাধার চক্র অর্থাৎ যেখানে আমাদের কুন্ডলিনী চক্র থাকে সেখানে প্রচুর এনার্জি একত্রিত হচ্ছে।আপনি এবার অনুভব করুন যে,এই
মহাবিশ্বের প্রচুর অফুরন্ত পজেটিভ এনার্জি আপনার মাথার
ভেতরে প্রবেশ করছে।সেসব এনার্জিগুলো মাথা দিয়ে ধীরে ধীরে আপনার শরীরে প্রবেশ করছে।আর আপনার মাথা, গলা, বুক ও পেট হয়ে সেই এনার্জিগুলো আপনার মূলাধার চক্র অর্থাৎ কুন্ডলিনী চক্রে একত্রিত হচ্ছে।মনে রাখবেন,যদি এই স্টেজে আপনার mind এ অন্যকোন চিন্তা চলে আসে তাহলে চলবে না।ভাবুক mind নিয়ে কখনোই কুন্ডলিনী জাগ্রত করা সম্ভব নয়।তাই আপনার mind কে আগে সম্পূর্ণ
চিন্তাশূন্য করে নিতে হবে।আর সেটা কিভাবে করবেন তা নিয়ে
পরে বলা হবে।
এবার আপনি এটা অনুভব করতে থাকুন,এই
মহাবিশ্বের সব এনার্জি আপনার কুন্ডলিনীতে জমা হচ্ছে।তার
সাথে সাথে আপনি নিজেকে এই মহাবিশ্বের সঙ্গে সংযুক্ত করে
নিয়েছেন।মনে করুন যেন এই মহাবিশ্ব আর আপনার মধ্যে কোন তফাৎ নেই।দুইজনে যেন একই।ভাবতে থাকুন আপনার
কুন্ডলিনীর মধ্যে এনার্জির ভান্ডার একত্রিত হচ্ছে।এইরকম ভাবে দশ বারো মিনিট মেডিটেশন করুন।এবার আপনি কল্পনা করুন আপনার সেসব এনার্জিগুলো আপনার কুন্ডলিনীকে জাগ্রত করছে।যেন আপনার কুন্ডলিনীকে জাগ্রত করার চাবি হলো এনার্জিগুলো।আপনার সম্পূর্ণ কল্পনা আর আবেগের ক্ষমতা দিয়ে অনুভব করার চেষ্টা করুন।এভাবে পাঁচ মিনিট করার পরে ধীরে ধীরে চোখ খুলে ফেলুন।আমি জানি এটা একদিনে সম্ভব নয়।আর এখানে যেহেতু কথা হচ্ছে প্রচণ্ড শক্তিধর কুন্ডলিনী চক্রের,তাই এক্ষেত্রে আপনাকে আপনার ধৈর্য্যের পরীক্ষা দিতেই হবে।আপনি প্রতিদিন মেডিটেশন করতে থাকুন।শুধু একটা দিক খেয়াল রাখবেন,আপনি জোর করে এইরকম কল্পনা করবেন না।মেডিটেশন একদম smoothly করবেন।আর যারা এখনো
সাধারণ মেডিটেশন ও করেন না,তারা আগে মেডিটেশন শুরু
করুন।যখন সাধারণ মেডিটেশন রপ্ত হয়ে যাবে,তারপর আপনি আজকের উল্লেখিত মেডিটেশনটি করতে থাকুন।অনেকেই ভাবে,আমিতো অনেকদিন ধরে মেডিটেশন করছি
তাহলে আমার কুন্ডলিনী জাগ্রত হচ্ছে না কেন?
দেখুন,এখানে কথা হচ্ছে কুন্ডলিনীর অসীম অলৌকিক শক্তির।যে শক্তিকে জাগ্রত করা এতো সহজ কাজ নয়।শুধু
মেডিটেশন করলেই যদি কুন্ডলিনী জাগ্রত হয়ে যেত,তাহলে
আজ পৃথিবীর এক-তৃতীয়াংশ মানুষের কুন্ডলিনী জাগ্রত হয়ে
যেত যারা নিয়মিত ধ্যান করছে।ধ্যান করলে আপনার অনেক
উন্নতি হবে ঠিকই,কিন্তু কুন্ডলিনীকে জাগ্রত করতে হলে গভীর ধ্যানের প্রয়োজন।ধ্যানের সঙ্গে সঙ্গে আরো এমন অনেক কিছু আছে যেগুলোকেও ফলো করতে হয়।কুন্ডলিনী জাগ্রত হলে মানুষ পাগল পযর্ন্ত হয়ে যেতে পারে।কারন কুন্ডলিনী জাগ্রত হলে আমাদের শরীরের সব চক্রের মধ্যেই
প্রচুর পজেটিভ এনার্জির ভাইব্রেশান হতে থাকে।এবার আপনার উপর নির্ভর করছে আপনি সে অফুরন্ত শক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন কিনা।আপনি যদি অনেকদিন ধরে মেডিটেশন করে থাকেন তাহলে হয়তো সে এনার্জিকে আপনি
নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।দীর্ঘদিন মেডিটেশন করলে আপনার mind এর উপর আপনার নিয়ন্ত্রণ চলে আসবে।মন নিয়ন্ত্রণে
আসলে এটাও হয়তো সম্ভব যে,আপনি আপনার কুন্ডলিনী শক্তিকেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।
0 Comments