আজকে সবচেয়ে মজার একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো।আমরা জানবো কিভাবে মাইণ্ড রিডিং মানে অপরের
মনের কথা সহজেই জানা সম্ভব।এরজন্য আমাদের মনকে কিছু বিশেষ উপায়ে তৈরী করতে হবে।যার ফলে আমরা অপরের গোপন কথা,তারা কী ভাবছে,তারা কী চাইছে সেসব সমস্তই বুঝতে পারবে।তুমি যদি কাউকে ভালোবেসে থাকো,
তার সঙ্গে কথা বলতে চাও,একটা নতুন সম্পর্কো তৈরী করতে চাও,পুরনো সম্পর্কো অথবা একে অপরের সঙ্গে বোঝাপড়া আরো শক্তিশালী করতে চাও,অথবা ইন্টারভিউ বোর্ডের স্যার, ম্যামরা কি ভাবছে,তারা কি জানতে চাইছে,তুমি এককথায় সবার মাইণ্ড রিড করে নিজেকে মেলে ধরতে পারবে।বুঝতে পারবে,এখন তোমার কি করা উচিত আর কি না করা উচিত।
কি বলা উচিত আর কি না বলা উচিত।ভাবছো,আদৌও কি এইসব সম্ভব।হ্যাঁ,১০০ভাগ নিশ্চিত থাকো,তা সম্ভব।এটা বিজ্ঞানের দিক থেকে প্রমাণিত। তোমরা টেলিপ্যাথির কথা নিশ্চয় শুনেছো।এটা হলো এমন মনের শক্তি যা ব্যবহার করে তোমাদের নিজের মন থেকে কোন চিন্তা বা কথা অপরের মনে পাঠানো সম্ভব।
সে তোমার কাছ থেকে যতোই দূরে থাকুক না কেন,তোমার মনের কথা ঠিক তার কাছে পৌঁছে যাবে।মনের অনেক ক্ষমতা রয়েছে।যার মধ্যে আজকে আমি বলবো Mind Reading Techniques.সবার প্রথমে আমাদের বুঝতে হবে,আমাদের মন কী? এটা কিভাবে কাজ করে?তারপর কি কি কৌশল রয়েছে mind reading এর তা জানাবো।শুরুতেই বলতে পারতাম টেকনিক।কিন্তু mind সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা তৈরী না হলে কিভাবে তোমরা সে টেকনিক ব্যবহার করবে।
আমাদের ব্রেইনের অনেক লেয়ার অথবা লেভেল রয়েছে।তার মধ্যে সর্বপ্রথম লেয়ার হলো conscious mind.তারপর subconscious mind ও তার একটা অংশ হলো unconscious mind।তার পরের লেয়ার হলো collective বা superconscious mind এবং সর্বশেষ cosmic conscious mind।
এই mind reading techniques শিখতে হলে আমাদের superconscious mind এ নিজেদের নিয়ে যেতে হবে।আমরা যখন কোন চিন্তা করি,কোন কিছুতে যুক্তি খুঁজি,বিশ্লেষণ করি এবং শেষে সিদ্ধান্ত নিই,তখন সমস্ত কিছু কে নিয়ন্ত্রণ করে আমাদের conscious mind।
কিন্তু আমাদের আবেগ,অভ্যাস,আস্থা,স্মৃতিশক্তি,অনুভূতি সমস্ত কিছু নিয়ন্ত্রণ করে আমাদের subconscious mind।অর্থাৎ আমরা চেতন অবস্থায় যা ভাবি,দেখি ও করি তার সবকিছুই সংরক্ষণ করে আমাদের subconscious mind।আর আমাদের unconscious mind হলো,আমাদের জন্মের পর থেকে আমরা যা যা অনুভব করি।
যেমন-প্রথম মা বলে ডাকা,যেকোন অভিজ্ঞতা সমস্ত কিছুই সংরক্ষণ করে।যা আমরা হাজার চেষ্টা করেও মনে করতে পারবো না।কিন্তু সে মেমোরি আমাদের মনের ভেতরে রয়েছে। তবে সেটাও মনে করা সম্ভব।সেটারও কিছু কৌশল রয়েছে।
আমরা subconscious mind ব্যবহার করে যা চাই তার সবকিছুই পেতে পারি।কিন্তু সেটা superconscious mind এর কাছে কিছু ই না।আমরা যখন কাউকে দেখি তখন তার মুখের হাবভাব দেখে বুঝতে পারি,সে মানুষটি এখন কি অনুভব করছে।খুশি আছে,রেগে আছে নাকি দুঃখী রয়েছে।
কিন্তু আমরা যদি তার পেছনের কারন জানতে চায়,কেন সে খুশি,কেন রেগে রয়েছে বা কেন সে দুঃখী,তাহলে আমাদের mind কে collective conscious mind এ নিয়ে যেতে হবে।
যার জন্য দুটো টেকনিক রয়েছে।যথা-self realization ও zero thoughts meditative state। প্রথমেই আসবো self realization এ।এই স্টেজে নিজের অস্তিত্ব বুঝতে হবে।তুমি যে এই মহাবিশ্বে বিদ্যমান,সেটা তোমার মনকে বলতে হবে।তোমার মনকে নিশ্চিত করে বলতে হবে,আমি এই পৃথিবীতে রয়েছি,আমি এই মহাবিশ্বে বিদ্যমান, আমার অস্তিত্ব রয়েছে।অর্থাৎ আমি বা নিজের উপর বিশ্বাস থাকতে হবে।শুধু নিজের ভেতরের শক্তিকে অনুভব করতে হবে এবং zero thoughts meditative state এ নিজেকে নিয়ে যেতে হবে।যার জন্য এইসময় মেডিটেশন করতে হবে।
চেয়ারে বা মেঝেতে যেকোন জায়গায় বসে আমরা মেডিটেশন করতে পারি।তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন আমরা তাতে আরাম বোধ করি।তোমরা দুই হাটু মুড়ে বসো এবং দুই হাতের আঙ্গুল হালকাভাবে ধরে বসো,শ্বাস নাও এবং স্বস্তিবোধ করো।যখন আমরা পা ভাঁজ করে,দুই হাতের আঙ্গুল মধ্যে রেখে বসি,তখন এনার্জি আমাদের কেন্দ্রে চলে আসে।কেন্দ্রের থেকে চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে।এবার চোখ বন্ধ করো।কারন চোখ হলো আমাদের mind এর দরজা।
যখনি আমরা চোখ বন্ধ করে বসবো,তখনি বিভিন্ন চিন্তা আমাদের মাথায় আসবে।বিভিন্ন প্রশ্ন,জানা ও অজানা।কথা বলা,চিন্তা করা বাদ দিয়ে শুধু আরাম করাটাই অনুভব করো।অনুভব করো তুমি যে শ্বাস নিচ্ছো এবং ছাড়ছো।সচেতনভাবে শ্বাস নেবেনা।চেষ্টা করো নিজে নিজেই যাতে শ্বাস নেওয়া ও ছাড়া হয়।এটাকে অনুভব করো।
যখন আমরা আরাম করে বসি,তখন consciousness travel করে necks zone, mind এবং intellect এ।এভাবে আমরা zero thoughts level এ পৌঁছতে পারলে আমরা মেডিটেশনে meditative state এ পৌঁছতে পারবো।যা আমাদের super conscious mind এর দরজা খুলে দেবে।আমরা আগের তুলনায় অনেক বেশি শক্তি অনুভব করবো।আমরা নিজের ভেতরে একটা শক্তি বা এনার্জি অনুভব করবো।তবে আমরা কিভাবে বুঝবো,আমরা zero or no thoughts level এ পৌঁছে এই super conscious mind এর ক্ষমতা অর্জন করতে পেরেছি। এটার জন্য প্রচুর অনুশীলন দরকার।
আমরা প্রতিদিন এই টেকনিক অনুশীলন করলে ধীরে ধীরে নিজেরাই বুঝতে পারবো,আমাদের ভেতরে একটা শক্তি আসছে। আমাদের mind অনেক relax থাকবে।সহজেই বুঝে ফেলতে পারবো অপরের মনের গোপন কথা।রোজ সকালে ঘুম থেকে ওঠে ফ্রেশ মাইণ্ডে এটা নিয়মিত প্রতিদিন অনুশীলন করো।
১০-১৫ মিনিট।প্রথম প্রথম যখন চেষ্টা করবে,তখন বিভিন্ন চিন্তা আসবে।Mind কে স্থির রাখতে পারবে না।বারবার মনোযোগ নষ্ট হয়ে যাবে।এটা হবেই।তাই চিন্তার কিছু নেই।শুধু হাল ছেড়ো না।দেখবে ধীরে ধীরে এক মিনিট থেকে দুই মিনিট,পাঁচ মিনিট,পনেরো মিনিট করে করে সহজেই zero thoughts level এ পৌঁছে মেডিটেশন করতে পারবে।
তোমরা এই শক্তির সঙ্গে একবার পরিচিত হলে বুঝতে পারবে,তোমরা ঠিক কি হাতে পেয়েছো।তোমাদের মধ্যে অনেকেই এটা বিশ্বাস করতে চাইবেনা।তাদের প্রমাণ চায়।ঠিক আছে প্রমাণ দেওয়া হলো- তোমরা অনেকেই বিজ্ঞানের একটি অংশ কোয়ান্টাম ফিজিক্সের কথা শুনেছ,সেখানে এর প্রমাণ পেয়ে যাবে।
কোয়ান্টাম ফিজিক্স বলে,যখন কোন বস্তুকে কেউ দেখেনা,দর্শনকারীও নেই,তখন সেটা তরঙ্গরূপে থাকে।আর যখন সেটা নজরে আসে,তখন সেটা particleform এ চলে আসে।
এই তত্ত্বের উপর নির্ভর করে subconscious mind এর শক্তি বৃদ্ধি করা সম্ভব।যখন কোন বস্তুকে আমরা আমাদের mind এ ফোকাস করি,সেটাকে মন থেকে চায়,তখন সেটা তরঙ্গরূপে আমাদের ইচ্ছে হিসেবে থাকে।যখন সেটার আমরা দর্শক হই,অর্থাৎ visualize করি,তখন
আমাদের subconscious mind তা আমাদের সামনে particleform এ নিয়ে আসে।এই একই ধারণা mind reading এর ক্ষেত্রেও ব্যবহার হয়।আমরা যখন zero thought বা meditative state এ পৌঁছোয়,আমরা তখন অন্যের mind এর vibration কে অনুভব করতে পারি।তা read করতে পারি।যখন সে vibration ব্রেইনে আসে,waveform থেকে semi wave ও semi particle form এ পরিবর্তন হয়।এরপর সেটা যখন আমাদের ব্রেইনের
নিউরনের কাছে পৌঁছায়,তখন আমরা বুঝতে পারবো সে ঠিক কি ভাবছে।কিন্তু তোমরা বলবে,ঠিক আছে মানলাম,vibration আমাদের ব্রেইনে এসে পৌঁছায়।কিন্তু এটার জন্যতো তাদের মধ্যে কানেকশন দরকার।তোমরা একদম ঠিক বলছো।কানেকশন রয়েছে।
কোয়ান্টাম ফিজিক্সের মতে,পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ অপর মানুষের সঙ্গে সংযুক্ত।বাতাস যেরকম দেখা যায় না,কিন্তু রয়েছে।সেরকম এই কানেকশন দেখা যায় না।কিন্তু পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ অপর মানুষের সঙ্গে সংযুক্ত।
যেমন-ধরো,তুমি তোমার কোন বন্ধুর কথা ভাবছো।তখন তার ফোন চলে এলো।অথবা কারো সম্পর্কে কথা বলছো,হঠাৎ সে তোমাদের মাঝে চলে এলো।এটা কেন হয়? এটা কোন কাকতালীয় ঘটনা নয়।আমাদের প্রত্যেকের ব্রেইন অপরের ব্রেইনের সঙ্গে সংযুক্ত conscious level এ। তাই তোমরা তাদের আকর্ষণ করে নাও।আর এই কানেকশনের জন্য zero thoughts level এ তোমরা যে কারো mind read করতে পারো।তাদের thoughts তোমাদের mind এ চলে আসে।সুতরাং তোমরা এটাকে বলতে পারো,কারো mind reading এর পেছনের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা।
মেডিটেশন করার অনেক পদ্ধতি রয়েছে।তার মধ্যে থেকে আমি কিছু পদ্ধতি শেয়ার করবো।যা সহজেই সবাই শিখতে পারো।তার আগে বলবো মেডিটেশন করার আগে কিভাবে বসতে হয় এবং কোথায় বসতে হয়।
যেকোন জায়গায় বসে মেডিটেশন করতে পারো।তবে খেয়াল রাখতে হবে,বসার জায়গাটা যেন আরামদায়ক ও স্থিতিশীল হয়।তোমরা চেয়ার বা মেঝেতে বসে করতে পারো,শুধু খেয়াল রাখতে হবে যেন জায়গাটা আরামদায়ক হয়।তোমরা পা ও হাঁটু মুড়ে বসো এবং দুই হাতের আঙ্গুল আরামদায়কভাবে ধরে বসো এবং শ্বাস নাও।শুধু relax feel করো।যখন আমরা পা ভাঁজ করে, দুই হাতের আঙ্গুল ধরে বসি,তখন এনার্জি আমাদের কেন্দ্রে চলে আসে এবং কেন্দ্র থেকে চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে।
এইবার চোখ বন্ধ করো।কারন চোখ হলো আমাদের mind এর দরজা।যখনি আমরা চোখ বন্ধ করে বসবো,তখন বিভিন্ন চিন্তা আমাদের মাথায় আসবে।বিভিন্ন প্রশ্ন,সেটা জানা বা অজানা।কথা বলা,চিন্তা করা সমস্ত কিছু বন্ধ করে দাও।শুধু relax করো।অনুভব করো তুমি যে শ্বাস নিচ্ছো এবং ছাড়ছো। সচেতনভাবে শ্বাস নিবে না।চেষ্টা করো নিজে নিজেই যাতে শ্বাস নেওয়া ও ছাড়া হয়।তুমি শুধু সেটাকে অনুভব করো।যখন আমরা relax হয়ে বসি,আমাদের consciousness travel করে necks zone,mind এবং intellect এ।এভাবে আমরা zero thoughts level এ পৌঁছতে পারলে,আমরা মেডিটেশনের meditative state এ পৌঁছতে পারবো।
এই সময় cosmic energy shawer আমাদের mind এ প্রবেশ করতে থাকবে।এই শক্তি আমাদের পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়বে।আমরা আগের তুলনায় অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী হবো।আমাদের concentration power বাড়বে।আমাদের mind আগের তুলনায় অনেক বেশি powerful হবে।Subconscious mind এর power সম্পর্কে কারো অজানা নয়।এই power ব্যবহার করে আমরা যা চাই তাই পেতে পারি।
আমরা মেডিটেশন করে এই subconscious mind এর power বৃদ্ধি ও করতে পারি।আমরা যখন আরাম করে বসে মেডিটেশন করবো তখন সমস্ত চিন্তা বাদ দিয়ে relax করে বসতে হবে।সেটা করার পর আমরা zero thoughts level এ যাবার পর আমাদের শুধু একটা জিনিসের উপর visualize করতে হবে।
শুধু সেই জিনিস,যেটা আমরা চাই।সেই picture এর উপর শুধু visualize করো।কোন চিন্তা না,কোন affirmation না।শুধু visualization।এর ফলে আমাদের subconscious mind সেই জিনিসটাকে আমাদের কাছে নিয়ে আসার জন্য আরো বেশি powerful হবে।তবে তোমরা যদি ছাত্র-ছাত্রী হয়ে থাকো তবে পরামর্শ দেবো,পড়তে বসার আগে অন্তত পাঁচ মিনিট মেডিটেশন করার সময় কোন কিছু visualize করবে না।শুধু relax করো,zero thoughts level এ নিয়ে যাও নিজেদেরকে।তাহলে mind অনেক fresh হবে। ভালো করে পড়তে পারবে।
চেষ্টা করো রোজ মেডিটেশন অনুশীলন করার।একদিনও বাদ দেবেনা।যখন প্রথম প্রথম অনুশীলন করবে,তখন বিভিন্ন চিন্তা মাথায় আসবে।ধীরে ধীরে সেসব চিন্তা দূর করতে হবে।
চেষ্টা এবং অনুশীলনের দ্বারা সমস্ত কিছু সম্ভব।মেডিটেশনের উপকারিতা তো জানলেন,এর সঠিকপদ্ধতিও জানলেন, কিভাবে মেডিটেশনের ফলে subconscious mind এর power বৃদ্ধি করবে তাও জানলেন,এবারো কি বলবেন এই
মেডিটেশন আমার জন্য না?
এবার নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিন,আপনারা এটার মাধ্যমে নিজেদের জীবন গড়বেন ও সাফল্য লাভ করবেন নাকি এড়িয়ে গিয়ে ঘুমিয়ে থাকবেন।পছন্দ আপনার।
0 Comments