তেজপাতার তেজি ক্ষমতা, তেজপাত খেলে যে সব রোগ ভালো হয়,
তেজপাতা আমরা কে না চিনি।এটি খাবারের স্বাদ বাড়াতে সুগন্ধিযুক্ত মসলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি দিয়ে বিভিন্ন ঔষধও তৈরী হয়।বেশিরভাগ তেজপাতা এশিয়া, উওর আমেরিকা ও দক্ষিণ আফ্রিকাতে পাওয়া যায়।তেজপাতায় অনেকপুষ্টিউপাদানরয়েছেএতেজল,শক্তি,শর্করা,প্রোটিন,ফাইবার,ক্যালসিয়াম,আয়রন ও ভিটামিন সি রয়েছে।এটি বিভিন্ন ধরণের স্বাস্থ্য সমস্যাগুলোকাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে। এবার জেনে নেওয়া যাক তেজপাতার উপকারিতাসমূহ: ☆ ত্বককে ভালো রাখতে তেজপাতা উপকারী।এজন্য তেজপাতা সৌন্দর্য পণ্য ও সাবান তৈরীতে ব্যবহৃত হয়। এটি ব্যাকটেরিয়ার বৈশিষ্ট্যযুক্ত হওয়ায় তা ত্বক থেকে ময়লা অপসারনে সাহায্য করে।তেজপাতার ক্রিম ব্যবহার করে ত্বককে মশার ও পোকার কামড় থেকে রক্ষা করা যায়। ☆ তেজপাতা কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করতে বেশ উপকারী।এটি শরীরে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে এবং খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করে। ☆ তেজপাতার তৈরী তেল ব্যবহারে যারা আর্থ্রাইটিসের যন্ত্রণায় পা নাড়তে পারেননা তারা উপকার পাবেন।আসলে তেজপাতায় উপস্থিত অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটারি উপাদান শরীরের ভেতরের প্রদাহ কমিয়ে ব্যাথা উপশম করতে সাহায্য করে।প্রসঙ্গত, এই ধরণের শারীরিক সমস্যায় তেজপাতা দিয়ে তৈরী করা চা খেলেও সমান উপকার পাওয়া যায়। ☆ সর্দি-কাশির প্রকোপ কমাতে তেজপাতা উপকারী।ঠাণ্ডা-গরমের কারনে সর্দি, কাশি ও জ্বর হওয়া খুব ই স্বাভাবিক।তেজপাতা দিয়ে তৈরী চা খেলে জ্বরতো কমেই, সেই সঙ্গে সর্দি - কাশি এবং বুকে কফ জমার মতো সমস্যা ও কমতে শুরু করে।তবে তা নিয়মিত খেতে হবে। ☆ কিডনির পাথরের চিকিৎসায় কাজে লাগে তেজপাতায় উপস্থিত বেশ কিছু কার্যকরী উপাদান, যা কিনডির ভেতরে জমতে থাকা পাথরগুলোকে শরীর থেকে বের করে দিতে সাহায্য করে।তাইতো ডাক্তাররা রোগীকে এই ধরণের সমস্যায় নিয়মিত তেজপাতা দিয়ে বানানো চা খাওয়ার পরামর্শ দেন। ☆ তেজপাতা ফুটানো পানি নিয়মিত খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।রক্তে উপস্থিত শর্করার মাত্রা কমাতে তেজপাতার কোন বিকল্প নেই বললেই চলে।তেজপাতায় উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ইনসুলিনের ক্ষরণ যাতে ঠিক থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখে।ফলে স্বাভাবিকভাবেই সুগার লেভেল বাড়ার সুযোগ পায়না। ☆হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে তেজপাতায় উপস্থিত ফিটোনিউট্রিয়েন্ট,ক্যাফিক অ্যাসিড,সিলিসাইকেলেট এই উপাদানগুলোর জন্য।তেজপাতায় থাকা ক্যারোটিন হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের আশঙ্কা কমাতেও বিশেষ ভূমিকা রাখে। ☆ চুলের স্বাস্থ্যের জন্য তেজপাতা উপকারী।এটি চুলের শিকড়কে শক্তিশালী করে ও চুল ভাঙ্গা রোধ করে।এটিতে অ্যান্টিফাঙ্গাল ও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা চুলকে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে। ☆ ছত্রাকের সংক্রমণ প্রতিরোধে তেজপাতা উপকারী। ☆ মানবদেহের পরিপাকতন্ত্র ব্যবস্থায় বেশ প্রভাব ফেলে তেজপাতা। এটি শরীর থেকে অতিরিক্ত টক্সিন বের করে দেয় এবং শরীরকে আরো ও ভালোভাবে কাজ করতে সহায়তা করে।তেজপাতায় রয়েছে এমন জৈব যৌগ, যা পেটের অসুখ সারাতে সাহায্য করে।
☆ তেজপাতায় রয়েছে লিনালুল নামক উপাদান। এটি উৎকণ্ঠা কাটাতে,শান্ত থাকতে ও হতাশা দূর করতে সহায়তা করে। ☆ তেজপাতার অন্যতম গুণ হলো এটি প্রদাহের বিরুদ্ধে কাজ করে।এটি যেকোন ধরণের মাথাব্যাথা উপশমে কার্যকরী। ☆বিভিন্ন ধরণের ক্ষত নিরাময়ে তেজপাতা অতুলনীয়।এটি জীবাণুনাশক হিসেবে কাজ করে। ☆কিছু গবেষণায় দেখা যায় তেজপাতা ক্যান্সারের কোষ ধ্বংস করে।এতে ফাইটোনিউট্রিয়ান্স ও ক্যাটচীন উপাদান থাকায় এটি ক্যান্সার কোষকে নিয়ন্ত্রন করতে পারে।একটি গবেষণা অনুযায়ী তেজপাতা ব্রেস্ট ক্যান্সারের বিরুদ্ধে ও কাজ করে। ☆ তেজপাতা অরুচি দূর করে।এ জন্য তেজপাতা সিদ্ধ করে তার পানি খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। ☆মাড়িতে ব্যাথা কিংবা ক্ষত হলে তেজপাতা সিদ্ধ পানিতে অল্প পরিমাণ লবণ মিশিয়ে গার্গল করার প্রচলন রয়েছে। ☆ শরীরের দুগন্ধ কমাতে তেজপাতা খুবই কার্যকর। এর জন্য একটুকরো কাপড়ে তেজপাতা গুড়ো নিয়ে কাপড় টি হালকা গরম পানিতে ডুবিয়ে রাখতে হবে।পরে সেই পানি দিয়ে গোসল করতে হবে। ☆ তেজপাতা সিদ্ধ পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। এটা ত্বক ফর্সা করার পাশাপাশি ব্রণও দূর করবে। ☆উজ্জল দাঁত পেতে সপ্তাহে কয়েকবার দাঁতে তেজপাতা ঘষা যেতে পারে। যারা দীর্ঘায়ু লাভ করতে চান তারা আজ থেকেই নিয়মিত তেজপাতা দিয়ে তৈরী চা খাওয়া শুরু করুন।দেখবেন অল্প দিনেই বুঝতে পারবেন তেজপাতা কিভাবে আয়ু বাড়ায়।তেজপাতায় থাকা ভিটামিন সি এবং ভিটামিন এ শরীরকে চাঙ্গা রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।তেজপাতায় উপস্থিত ফলিক অ্যাসিড একাধিক রোগকে দূরে রাখতে সাহায্য করে।এছাড়াও বেশকিছু উপাদান রয়েছে তেজপাতায়।যেমন- কপার, সেলেনিয়াম, আয়রন,জিংক,ম্যাগনেসিয়াম,মেঙ্গানিজ,পটাশিয়াম এবং ক্যালসিয়াম। সতর্কতা : ◆ যাদের তেজপাতা থেকে এলার্জি রয়েছে তাদের তেজপাতা খাওয়া উচিত না। ◆তেজপাতা বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত না।এটি তাহলে স্বাস্থ্যের উপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। ◆গর্ভাবস্থা ও স্তন্যদানকারী নারীদের ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তেজপাতা খাওয়া উচিত। ◆ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীরা ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তেজপাতা খাবেন। ◆সার্জারী রোগীদের দুই সপ্তাহ তেজপাতা খেতে নিষেধ করা হয়।কারন এটি স্নায়ুতন্ত্রের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
0 Comments